ওয়েব ডেস্ক ১১ই সেপ্টেম্বর ২০২০ :করোনা মহামারীতে বিপর্যস্ত বিশ্বে সম্ভাবনা জাগিয়েছিল অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকা। বৃহৎ পরিসরে মানবদেহে এ টিকা প্রয়োগের মাধ্যমে ব্রিটিশ ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রজেনেকা কার্যকারিতা যাচাই করলেও একজন অসুস্থ হয়ে পড়ায় গত বুধবার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। এটি ছাড়াও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) উন্নয়নে থাকা অন্তত ৩৪টি টিকায় চোখ রেখেছে। গত বুধবার ব্রিটিশ সাময়িকী ‘দি ইকোনমিস্ট’ এক প্রতিবেদনে বলেছে, অ্যাস্ট্রজেনেকার ক্ষেত্রে যা ঘটেছে, টিকার উন্নয়নে এটি স্বাভাবিক। অনেক গবেষণার পরও ডেঙ্গুজ¦রের একটি সম্পূর্ণ টিকা পাওয়া যায়নি। তিন দশকেও এইচআইভি টিকার প্রাপ্তি শূন্য। তবে দি ইকোনমিস্ট নতুন দুটি গবেষণায় মানবদেহে সৃষ্ট অ্যান্টিবডি দীর্ঘ সময় অবস্থানের বিষয়ে আশাব্যঞ্জক খবর দিয়েছে।
প্রথমটি আইসল্যান্ডের জৈব প্রযুক্তি সংস্থা ডিকোড জেনেটিক্সের বিজ্ঞানীদের, যা ‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন’-এ প্রকাশ করা হয়। এতে গবেষকরা কভিড-১৯ সংক্রমণের পর সেরে ওঠা ১২০০ আইসল্যান্ডের নাগরিকের মধ্যে ৯০ শতাংশের দেহে দুবার অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় ইতিবাচক ফল পেয়েছেন। প্রথমবার সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার পর তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া যায়। দ্বিতীয়বার চার মাস পরের পরীক্ষাতেও অ্যান্টিবডি মেলে। এদের সংক্রমণের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে, হাসপাতাল পর্যন্ত যেতে হয়। পুরুষ ও বয়স্ক ব্যক্তি, যারা গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকিতে ছিলেন, তাদের ক্ষেত্রেও অ্যান্টিবডির একই ফল পাওয়া গেছে। অ্যান্টিবডি চার মাস স্থায়ী হওয়া মানে ওই সময় পর্যন্ত সুরক্ষিত থাকা সম্ভব। ফলে এমন এক টিকার প্রয়োজন হবে, যা অ্যান্টিবডির উৎপাদনকে প্ররোচিত করে দীর্ঘস্থায়ী সুরক্ষা দিতে পারবে। এগুলো খুঁজে বের করাও সহজ। ব্যাপকহারে অ্যান্টিবডি শনাক্তকরণ ফলাফল মোটামুটি নির্ভুল হওয়া উচিত।
দ্বিতীয় গবেষণার নেতৃত্ব দেওয়া যুক্তরাজ্যের মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের (এমআরসি) ইমিউনোলজিস্ট তাও দং টি-সেল শনাক্তকরণে কাজ করেছেন। টি-সেল অ্যান্টিবডির মতো আলোচিত না হলেও সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই এবং দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষায় সমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গবেষণাটি ‘নেচার ইমিউনোলজি’ সাময়িকী প্রকাশ করেছে।
এমআরসি গবেষণার ক্ষেত্রে করোনায় মৃদু সংক্রমণের শিকার ২৮, গুরুতর অসুস্থ ১৪ ও ১৬ জন সুস্থ ব্যক্তির রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে। এতে সংক্রমিতদের ক্ষেত্রে টি-সেলের তীব্র এবং মৃদু ও গুরুতর অসুস্থদের ক্ষেত্রে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। মানুষের কোষে প্রবেশকারী স্পাইক প্রোটিনসহ ভাইরাসের আটটি পৃথক অংশ শনাক্ত করতে পারে টি-সেল। এ লক্ষ্যের তালিকা ভবিষ্যতে টিকার পরিশোধনে প্রয়োজনীয় ইঙ্গিত দিতে পারে। যদিও গবেষকরা এখনই উল্লসিত হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
No comments:
Post a Comment